গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, বিএনপির নেতাদের সঙ্গে আমরা বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছি। বিশেষ করে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের অধীনে যে শাসন চলছে, সে বিষয়সহ সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের বিষয়ে আমরা উভয় দলই উদ্বেগ প্রকাশ করি। এই বাস্তবতায় পর্যবেক্ষণে আমরা অনেক মিল খুঁজে পেয়েছি। আমরা মনে করি, বাংলাদেশে এই বাস্তবতায় অবিলম্বে পরিবর্তন হওয়া দরকার। এই বদল গণতন্ত্র ফেরার মধ্যে দিয়েই সম্ভব হতে পারে। তিনি বলেন, আমরা মনে করি আন্দোলন ছাড়া এই অবস্থা বদলানোর অন্য কোনো পথ নেই। আমাদের দলের পক্ষে এ বিষয়ে পরিস্কার করেই আমরা অবস্থান নিয়েছি। আজকে আলোচনার মধ্যে এ বিষয়ে ঐক্যমত হয়েছে যে, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনই গণতন্ত্রের গতির মুখে ফেরার প্রথম পদক্ষেপ। কিন্তু বর্তমান সরকারের অধীনে এই নির্বাচন কোনোমতেই সম্ভব নয়। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটা বড় ঐক্যমত তৈরি হয়েছে। এটা আগামী দিনের আন্দোলন ও রাজনীতির জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
মঙ্গলবার রাজধানী হাতিরপুলে গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। এর আগে সরকার পরিবর্তনে বৃহত্তর আন্দোলনের প্লাটফর্ম গড়তে জোনায়েদ সাকির সঙ্গে সংলাপে বসেন মির্জা ফখরুল।
জোনায়েদ সাকি জানান, সাংবিধানিক কাঠামোর বদল দরকার। এজন্য সংবিধান সংশোধনের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। যেমন নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ আলাদা করতে হবে, নিম্ন আদালতকে উচ্চ আদালতের অধীনস্থ করতে হবে, উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগ সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি করাসহ ৭টি প্রস্তাবনা আমরা তুলে ধরেছি।
তিনি জানান, গণসংহতি আন্দোলন ৭০ অনুচ্ছেদের সংস্কার, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা, সব সাংবিধানিক পদে সাংবিধানিক কমিশন গঠনের মধ্যে দিয়ে নিয়োগ, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য, সংসদে নিম্ন কক্ষ ও উচ্চ কক্ষ করতে হবে, প্রদেশ ব্যবস্থা সামনে নিয়ে আসা, সব অগণতান্ত্রিক আইন বাতিল করা এবং প্রত্যেক নাগরিকের সুযোগের সমতার জন্য সাংবিধানিকভাবে আইনি সুরক্ষা প্রস্তাব করেছি। এই বিষয়গুলো নিয়ে বিএনপিও কাজ করছেন এবং ভাবছেন বলে তারা আমাদের জানিয়েছেন।
বর্তমান সরকারের পতনের জন্য আন্দোলন দরকার মন্তব্য করে জোনায়েদ সাকি বলেন, বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে যদি জাতীয় রূপরেখা হাজির হয় তাহলে আমরা বৃহত্তর ঐক্যে গড়ে তুলে বর্তমান সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে পারবো। সেজন্য আমরা প্রাথমিকভাবে ঐক্যমত হয়েছি যে, যুগপৎ আন্দোলন আমাদের যার যার অবস্থা থেকে পরিচালনা করতে হবে। আর ভবিষ্যতেও এবিষয়ে আরো আলোচনা হবে। এর মধ্য দিয়ে একটা রূপরেখা সামনে আসবে।
এদিকে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সরকার পরিবর্তনে বৃহত্তর আন্দোলন প্লাটফর্মের প্রধান দাবি হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গণসংহতি আন্দোলনের সঙ্গে আজকের আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এই আলোচনা অব্যাহত থাকবে। আর এই আন্দোলনের প্রক্রিয়ার মধ্যে প্রধান যে দাবি থাকবে, আমরা আশা করি- অন্য দলগুলোও একমত হবে। সেটা হচ্ছে যে, আমাদের দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, রাজনৈতিক কারণে যারা বন্দি আছেন এবং সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে যে ৩৫ রাখ মামলা আছে- সেগুলোকে প্রত্যাহার করার দাবি এই আন্দোলনের মধ্যে সবচেয়ে বড় একটা বিষয় থাকবে।
যুগপৎ আন্দোলনের ব্যাপারে গণসংহতি আন্দোলন ও বিএনপি একমত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আশার কথা যে- এই আলোচনার মধ্যে দিয়ে আমরা অনেকগুলো বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছি। আর আমরা বারবার বলছি, একটা গণঅভ্যুত্থান এবং গণআন্দোলনে মধ্যে এই সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে একটা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আমরা একমত হয়েছি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা একমত হয়েছি, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বাতিল করতে হবে, নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করতে হবে এবং তাদের অধীনে যে নির্বাচন কমিশন গঠন হবে, সেই ইসির অধীনে ভোট হবে। আর সেই নির্বাচনের মাধ্যমে ভবিষ্যতে সরকার ও সংসদ গঠন হবে। এ বিষয়ে মৌলিক কোনো মতভেদ দেখিনি।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হলে সংবিধানের পরিবর্তন এবং কতগুলো মৌলিক বিষয়ে পরিবর্তন অত্যন্ত জরুরি বলে আমরাও মনে করি। সেগুলো আলোচনার মধ্য দিয়ে একটি জায়গায় একমতে এসে পৌঁছাতে পারবো বলে আমরা বিশ্বাস করি।
বিএনপির পক্ষে সংলাপে মির্জা ফখরুলের সঙ্গে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সাবেক এমপি জহির উদ্দিন স্বপন উপস্থিত ছিলেন।
সংলাপে জোনায়েদ সাকির সঙ্গে গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়ক আবুল হাসান রুবেল, রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আখতার, হাসান মারুফ রুমি, সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য ইমরান জুলকার নাঈম, বাচ্চু ভুইয়া, জুলহাস নাঈম বাবু, দীপুক রায়, মিজানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ২৪ মে বিকেলে রাজধানীর তোপখানা রোডে বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার সঙ্গে প্রথম বৈঠক করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পরে গত ২৭ মে সরকার পরিবর্তনে বৃহত্তর আন্দোলন প্লাটফর্ম গড়তে বাংলাদেশ লেবার পার্টির সঙ্গে সংলাপ করেছে বিএনপি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার অংশ এসব বৈঠক করছে বিএনপি।
বিএনপির পক্ষে সংলাপে মির্জা ফখরুলের সঙ্গে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সাবেক এমপি জহির উদ্দিন স্বপন উপস্থিত ছিলেন।
সংলাপে জোনায়েদ সাকির সঙ্গে গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়ক আবুল হাসান রুবেল, রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আখতার, হাসান মারুফ রুমি, সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য ইমরান জুলকার নাঈম, বাচ্চু ভুইয়া, জুলহাস নাঈম বাবু, দীপুক রায়, মিজানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ২৪ মে বিকেলে রাজধানীর তোপখানা রোডে বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার সঙ্গে প্রথম বৈঠক করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পরে গত ২৭ মে সরকার পরিবর্তনে বৃহত্তর আন্দোলন প্লাটফর্ম গড়তে বাংলাদেশ লেবার পার্টির সঙ্গে সংলাপ করেছে বিএনপি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার অংশ এসব বৈঠক করছে বিএনপি।