বন্যা দুর্গত এলাকার কোটি মানুষকে নেয়া হয়েছে নিরাপদ স্থানে

Spread the love

বন্যা দুর্গত সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে এ পর্যন্ত এক কোটি মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দুর্গত মানুষ উদ্ধারের জন্যে আরো ২০ কোটি টাকা দিয়েছেন।

রোববার (১৯ জুন) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী। এদিকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জানান, বন্যার পানি সরাতে সিলেট-সুনামগঞ্জের কিছু সড়ক কাটতে হয়েছে।

সারাদেশের ১২ জেলার মোট ৭০ উপজেলা এখন বন্যার কবলে। এরই মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সিলেট- সুনামগঞ্জ। নতুন করে প্লাবিত হওয়া এলাকার সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।

এমন বাস্তবতায় সচিবালয়ে কথা বললেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী। বলেন, দুই জনের প্রাণহানি হলেও প্রায় এক কোটি মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

এনামুর রহমান জানান, সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে। তবে সুনামগঞ্জে অপরিবর্তিত আছে। একই সঙ্গে হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে অবনতি হয়েছে।

তিনি আরো জানান, দুর্গত এলাকায় পর্যাপ্ত ত্রাণ আছে, সেখানে খাবারের সমস্যা হবে না। উদ্ধার কাজে সেনাবাহিনীর ৩২টি, নৌ বাহিনীর ১২টি এবং ফায়ার সার্ভিসের ৪টি বোট কাজ করছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সিলেট ও সুনামগঞ্জে এক লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সুনামগঞ্জে ৭০ হাজার ও সিলেটে ৩০ হাজার মানুষ।

আরো অনেক মানুষ এখনও পানিবন্দি। সেখানে সেনাবাহিনীর সহায়তায় জেলা প্রশাসনের ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

ডা. এনাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী বন্যার্তদের জন্য আরো ২০ কোটি টাকা দিয়েছেন। বন্যাকবলিত সব জেলায় ১০ লাখ টাকা ও ১০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বন্যার বিষয়ে আগাম তথ্য পেলেও এর ভয়াবহতা নিয়ে ধারণা করা যায়নি। ভারতের মেঘালয়ে ভারি বৃষ্টিপাত এর জন্য দায়ী বলেন জানান তিনি।

তিনি বলেন, পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে বাধ দিয়ে এ পানি ঠেকানো যাবে না। এবং ঠেকানো উচিতও না। কারণ বন্যার এ পানি অনেক উঁচু হয়ে আসে।

সে পর্যন্ত বাধ দেওয়া যায় না। তাছাড়া বন্যার পানি নেমে গেলে পর্যাপ্ত পলি রেখে যায়। এই পলি ফসল উৎপাদনে সহায়ক।

তিন দিনে ২৪০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে বৃষ্টির পানি যুক্ত হয়ে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

১২২ বছরে এরকম বন্যা এখানে হয়নি। ফলে এরকম পরিস্থিতিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা আমাদের ছিল না বলেও মনে করিয়ে দেন প্রতিমন্ত্রী।

এদিকে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার বেশ কিছু রাস্তা কাটা হয়েছে। এর ফলে পানি সহজে নেমে যাচ্ছে।

আরো কোথাও রাস্তা কাটার প্রয়োজন হলে কাটা হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে বন্যা মোকাবিলায় একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা ৩০ তারিখ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবে।

তিনি বলেন, আমরা এখন সব কাজ করে ফেলতে পেরেছি, এ কথাটি সঠিক নয়। কিছু কিছু জায়গা উদ্ধার করা হয়েছে। কিছু কিছু খাল খনন করা হয়েছে এবং তা এখনো চলছে।

আরও পড়ুন: ১০ মিনিটের ঝড়ে ১৫ ঘর বিধ্বস্ত, বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ

মন্ত্রী বলেন, সুনামগঞ্জসহ সিলেটের বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হওয়ার প্রধান কারণ বৃষ্টির পানির পাশাপাশি উজানের ঢল। বন্যা নিয়ে কোনো সংস্থা সঠিক পূর্বাভাস দিতে পারেনি।

রাজধানীতে এবার জলাবদ্ধতা কম হতে পারে মন্তব্য করে তাজুর ইসলাম বলেন, মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টি হলে এবং উঁচু অঞ্চল থেকে অনেক বেশি পানি নেমে আসলে ঢাকাও প্লাবিত হতে পারে।