বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সারা দেশে প্রচণ্ড লোডশেডিং হচ্ছে, এটা ভয়াবহ। সরকার শতভাগ বিদ্যুতের কথা বলেছিল। এখনকার অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে সেগুলো কেবল বাকসর্বস্ব কথা ছিল। এগুলো (কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্ট) করার আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে দুর্নীতি করা, এসব করে নিজেদের পকেট ভারী করা, বিদেশে গিয়ে বাড়ি-ঘর তৈরি করা।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সম্প্রতি সাভারে স্কুল শিক্ষক হত্যার ঘটনা, নড়াইলে অধ্যক্ষকে অপমানসহ সারা দেশে সামাজিক নৈরাজ্যের চিত্রে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় এই বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। সভা মনে করে, এই অনির্বাচিত সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা না থাকায় সমাজের সকল পর্যায়ে নীতি-নৈতিকতার চরম অবক্ষয় দেখা দিয়েছে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত পার্লামেন্ট এবং সরকার গঠনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সমাজ সৃষ্টি করলেই সমাজে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আসতে পারে। ’
সম্প্রতি জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৫০তম অধিবেশনে উত্থাপতি ‘ডিজিটাল যুগে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকতার নিরাপত্তা জোরদার’ শীর্ষক প্রতিবেদেনে ‘বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে’ সন্তোষ প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটাতে প্রমাণিত হয়েছে এই সরকার সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করে গণতন্ত্রকে হরণ করেছে। ’
ইডিএফ নামে রিজার্ভ থেকে ঋণ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ইডিএফ’ না দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে সরকারের শীর্ষ মহলের ঘনিষ্ঠ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সাড়ে সাত মিলিয়ন ডলারের ঋণ প্রদানের ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৩৪ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলার। ওই ধরনের প্রায় সবটাই (ফোর্সডলোন অধিকাংশই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের) পর্যবসিত হয়েছে। আইএমএফ এ ধরনের ঋণের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ অন্তর্ভুক্ত না করতে বলেছে। এই সাড়ে সাত বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রার অবয়বে আর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
তিনি বলেন, সরকার অর্থনীতির সকল নিয়ম-কানুন ভঙ্গ করে, রিজার্ভের সকল বিধি ভঙ্গ করে শুধু নিজেদের ঘনিষ্ঠ এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের লাভবান করার জন্য রাষ্ট্রের এই ভয়াবহ ক্ষতি করে চলেছে। ইডিএফ ঋণের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা পাচার করে বিদেশের বিভিন্ন স্থানে বাড়ি, ব্যবসা, স্থাপনা তৈরি করে দেশের অর্থনীতির ভয়াবহ ক্ষতি সাধন করছে। এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব সামাজিক ও অর্থনীতি ও সমগ্র অর্থনীতিকে দেউলিয়া করে ফেলবে বলে অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির গতকালের সভায়ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।