রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার এক কলেজ অধ্যক্ষকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে। রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের এই সংসদ সদস্য তার কার্যালয়ে গত ৭ জুলাই রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে পিটিয়ে আহত করলেও মঙ্গলবার বিষয়টি প্রকাশ পায়। এ ঘটনা তদন্তে বুধবার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
তবে বুধবার রাতে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে স্ট্যাটাস দিয়ে মারপিটের ঘটনা মিথ্যা, ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন অধ্যক্ষ সেলিম রেজা। ঘটনা অস্বীকার করেছেন সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীও।
ওমর ফারুক চৌধুরী সমকালকে বলেছেন, ‘সেদিন অন্তত ১০ জন অধ্যক্ষ আমার চেম্বারে উপস্থিত ছিলেন। অধ্যক্ষরা দুটি পক্ষ তর্ক-বিতর্ক ও বাকবিতণ্ডা করছিলেন। আমি দুই পক্ষকেই থামিয়েছি মাত্র। অধ্যক্ষকে মারলে কেউ ১০ জনের সামনে মারে? একা ডেকেই তো মারা যেতো।’
তিনি দাবি করেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদের পরিকল্পনায় এমন মিথ্যা ঘটনা একজন সংবাদকর্মী গণমাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। এজন্য তিনি মামলা করবেন।
এদিকে এ মারপিটের ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক আতাউর রহমানের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে মারপিটের ঘটনা জানার পরই উপাচার্য মশিউর রহমান তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কমিটিকে যত দ্রুত সম্ভব প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন উপাচার্য।
উপাচার্য বলেন, ‘প্রতিবেদন পাবার পরই পরবর্তী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
এদিকে এ ঘটনা প্রকাশের পর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না অধ্যক্ষ সেলিম রেজার। সকালে তার মোবাইল ফোন খোলা থাকলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। দুপুরের পর থেকে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
বিশ্বস্ত এক সূত্রে জানা গেছে, ঘটনা প্রকাশের পর চাপের মুখে তিনি সিরাজগঞ্জে নিজের বাড়িতে চলে গেছেন।
অধ্যক্ষ সেলিম রেজা কোথায় জানতে চাইলে সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, ‘তিনি কোথায় তা আমার জানার কথা নয়। তবে তার উপর সংবাদকর্মীরা যে অত্যাচার শুরু করেছে, তাতে বাড়িতে থাকার সুযোগও দেখছি না।’
জানা গেছে, গত ৭ জুলাই থিম ওমর প্লাজার সাংসদ ফারুক চৌধুরীর কার্যালয়ে অধ্যক্ষ সেলিম রেজাসহ ১০ জন শিক্ষক ছিলেন। সেই বৈঠকে এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী অধ্যক্ষ সেলিম রেজার কাছে জানতে চান, তার কলেজের কয়েকজন শিক্ষক আরেকটি কলেজের অধ্যক্ষের স্ত্রীকে নিয়ে অশ্লীল কথাবার্তা বলেছেন। অধ্যক্ষ হিসেবে তিনি কী ব্যবস্থা নিয়েছেন? এসময় অধ্যক্ষ সেলিম রেজা বলেন, তিনি বিষয়টি জানেন না। যদি এমন কোনো ঘটনার প্রমাণ থাকে, তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। এরপর এমপি ফারুক তার ফোনের রেকর্ড অন করে অধ্যক্ষ সেলিমকে শুনতে বলেন। এ সময় তিনি উত্তেজিত হয়ে সেলিম রেজাকে মারধর করেন।