প্রথমবারের মতো আফ্রিকার কোনো দেশ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। দেশটি মরক্কো। এর সঙ্গে ইতিহাসও গড়ে ফেলল। বিশ্বকাপ ফুটবল ইতিহাসে গত ৯২ বছরে আফ্রিকার কোনো দল সেমিফাইনালে উঠতে পারেনি। গতকাল শনিবার রাতে কোয়ার্টার ফাইনালে পর্তুগালকে হারিয়ে ইতিহাস পাল্টালো মরক্কো। আল থুমামা স্টেডিয়ামে পর্তুগালকে ১-০ গোলে হারিয়ে নতুন স্বপ্নের পথে মরক্কোর ফুটবলাররা।
নতুন ইতিহাস গড়ার আনন্দে ভাসছে দেশটি। কাতারের দোহা, মরক্কোর রাজধানী রাবাত, বড় শহর কাসাব্রাঙ্কা থেকে মধ্যপ্রাচ্য পেরিয়ে মরক্কোর উৎসবের রং ছড়িয়ে পড়েছে ব্রাসেলস-তিউনিসেও।
বেলজিয়াম ও তিউনিসিয়ার মরক্কো–ভক্তরাও উৎসবে মেতেছেন। ইতিহাস গড়া জয়ের পর মরক্কোর খেলোয়াড়দের আনন্দ যেন বাঁধ মানছিল না। মাঠে ও মাঠের বাইরে উদ্যাপনে ছিল ভিন্নতা। মাঠে কেউ সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন, কেউবা টি-শার্ট খুলে ছুড়ে মারছেন ওপরে। এরই মধ্যে একটি মুহূর্তে সবার চোখ আটকে যায় মরক্কোর সোফিয়ান বুফালের দিকে। মাঠে তিনি উদ্যাপন করছেন তাঁর মায়ের সঙ্গে। এ উৎসবের মধ্য অন্যতম সেরা মুহূর্ত বোধ হয় মাঠে মায়ের সঙ্গে ফুটবলারের সেই নাচ। নাচের ছবি ও ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
পর্তুগালকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ার আনন্দে মেতেছে মরক্কো
এর আগের ম্যাচগুলোতেও দেখা গেছে, মায়ের আদর পেয়েছেন মরক্কোর ফুটবলাররা। গ্যালারি থেকে ছেলেদের কপালে চুমু এঁকে দিয়েছেন মায়েরা। ইউরোপে খেলেন মরক্কোর মিডফিল্ডার সোফিয়ান বুফাল। মাকে নিয়ে রীতিমতো নেচে–গেয়ে উদ্যাপন করলেন গতকাল রোনালদোদের বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ের পর। এ উদ্যাপন মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়েছে ফেসবুক–টুইটারসহ সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
জয়ের প্রতিক্রিয়ায় মিডফিল্ডার সোফিয়ান বুফাল বলেছেন, ‘এটা আমাদের প্রাপ্য। আমরা কঠিন পরিশ্রম করেছি। এটা এখনো শেষ হয়নি। এখনো সেমিফাইনাল আছে এবং সৃষ্টিকর্তা চাইলে ফাইনালও।’
ফুটবল–বিশেষজ্ঞেরাও মরক্কোর এই জয়কে দেখছেন বিশেষভাবে। এই জয়কে ঐতিহাসিক উল্লেখ করে সাবেক স্কটিশ উইঙ্গার প্যাট নাভিন বলেছেন, ‘এটা ঐতিহাসিক, একবারেই অপ্রত্যাশিত। ভুলে গেলে চলবে না, ওরা সুন্দর ফুটবলও খেলেছে। হ্যাঁ, ওরা রক্ষণাত্মক ছিল। তবে ওদের সামর্থ্যের কথাও বলতে হবে। ওরা যখন সুন্দর ফুটবল খেলেছে, সেটা মিডফিল্ড থেকে শুরু হয়েছে।’