দালালের মাধ্যমে সৌদি আরব গিয়ে ৮ মাসের মাথায় মারা যাওয়া আকবরের মরদেহ সুনামগঞ্জে এসে পৌঁছেছে। সৌদির দুর্গম মরুভূমিতে দীর্ঘদিন অনাহারে, অর্ধাহারে ও বিনা চিকিৎসায় গত ৫ নভেম্বর শনিবার তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর প্রায় দেড়মাস পর সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে এলো আকবরের মরদেহ।
আকবর আলী (১৯) সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভপুর উপজেলার বাঁধাঘাট দক্ষিণ ইউপির সিরাজপুর গ্রামের আব্দুল মোতালিবের ছোট ছেলে। পরিবারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট আকবর সৌদি আরবে যান। কিস্তি ও জমি বিক্রির টাকায় গত মার্চ মাসে বিদেশে পাড়ি জমান তিনি। একই গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে সৌদি প্রবাসী শহিদ মিয়ার মাধ্যমে আকবরসহ তিন যুবক একসঙ্গে বিদেশে যান।
আকবরের মারা যাওয়ার ঘটনায় তার বড় ভাই আব্দুস সালাম বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় বিদেশে থাকা দালাল শহিদ মিয়াসহ ৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলার আসামি ও শহিদের মা রাজিয়া খাতুনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাকি ৩ আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। মানব পাচার মামলায় রাজিয়া খাতুন বর্তমানে কারাগারে আছেন।
আকবর মারা যাওয়ার পর তার সঙ্গী সৌদি আরবে অবস্থানরত রাসেল, নুর আলমসহ বাকি তিনজনেরও একই অবস্থা। বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয় রসদ পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন তারা। দুঃখ-কষ্টে মানবেতর জীবন পার করছে জানিয়ে দেশে ফেরার আকুতি জানিয়ে পরিবারের কাছে ভিডিও পাঠিয়েছিলেন ওই তিন যুবক। তবে এখনও তারা দেশে পৌঁছাতে পারেনি।
আকবরের বড় ভাই আব্দুস সালাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল বুধবার রাত ১২টায় আকবরের মরদেহ বাংলাদেশে আসে। সেখান থেকে তারা মরদেহ গ্রহণ করে সকালে সুনামগঞ্জে নিয়ে আসেন। আসরের নামাজের পর জানাজা শেষে নিজ গ্রামের কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
বিশ্বম্ভপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো ইকবাল হোসেন জানান, সকালে সুনামগঞ্জে লাশ এসে পৌঁছালে তারা সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন। সৌদিতে মরদেহের ময়নাতদন্ত না হওয়ায় সুনামগঞ্জে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।