ঢাকায় এসেই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবনে গেলেন ডোনাল্ড লু

Spread the love

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী ডোনাল্ড লু আজ শনিবার (১৪ জানুয়ারি) রাতে নয়াদিল্লি সফর শেষে ঢাকায় এসেছেন। হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমেরিকাস অনুবিভাগের মহাপরিচালক নাঈম উদ্দিন আহমেদ ও ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।

সূত্র জানায়, সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাংলাদেশ বিমানের নিয়মিত ফ্লাইটে নয়াদিল্লি থেকে ঢাকা পৌঁছান ডোনাল্ড লু’র নেতৃত্বে ৭ সদস্যের মার্কিন প্রতিনিধি দল। বিমানবন্দর থেকেই ডোনাল্ড লু মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে তার বাসভবনে যান। সেখানে বৈঠক শেষে তিনি নৈশভোজে অংশ নেন।

জানা গেছে, দুদিনের বলা হলেও বাইডেন প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি ঢাকায় প্রায় ৩২ ঘণ্টা ব্যস্ত সময় কাটাবেন। রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে। এরপর তিনি গুলশানের সলিডারিটি সেন্টার পরিদর্শন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসবেন। সেখান থেকে ফরেন সার্ভিস একাডেমি যাবেন। এই দুই ভেন্যুর একটিতে পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন চীনা বংশোদ্ভূত মার্কিন অভিজ্ঞ কূটনীতিক লু।

এ ছাড়া তার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের সঙ্গেও দেখা করার কথা রয়েছে। পাশাপাশি তিনি ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের আয়োজনে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলবেন। এসব বৈঠকে টানাপোড়েনের ইস্যুগুলো সুরাহার মাধ্যমে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্ব দেবে দুই দেশ। ভূরাজনৈতিক ও কৌশলগত কারণে বিশ্বের অন্য বড় শক্তিগুলোর মতোই সব অস্বস্তির দেওয়াল ভেঙে বাংলাদেশকে পাশে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।

জানা গেছে, র‌্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া, জিএসপি পুনর্বহাল, যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনা ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনসহ অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকারে রয়েছে ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্যাটেজি, নিরাপত্তা সহযোগিতা, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে আকসা ও জিসোমিয়ার মতো চুক্তি সই, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং প্রস্তাবিত ডাটা সুরক্ষা আইন। ঢাকা ও ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে এ সফরে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তবে নিষেধাজ্ঞা, ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের অপ্রীতিকর ঘটনা, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, মানবাধিকার এবং শ্রম অধিকারসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে অস্বস্তি হয়ে থাকা বিষয়গুলোও আলোচনার এজেন্ডায় থাকবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো। তবে টানাপোড়েন যাই থাকুক, যুক্তরাষ্ট্র এ মুহূর্তে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও নিবিড় করতে চায়।

এদিকে লু’র ঢাকায় আগমনের ছবি টুইট করেছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস। ‘ওয়েলকাম টু বাংলাদেশ’ শিরোনামে প্রচারিত সেই টুইট বার্তায় বলা হয়, এই সফরে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে শক্তিশালী করতে তিনি বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

তিন দশক ধরে মার্কিন প্রশাসনে কাজ করছেন ডোনাল্ড লু। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণে তার ভূমিকাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই অঞ্চলে একাধিক দেশে সফর করলেও ঢাকায় এটিই ডোনাল্ড লু’র প্রথম একক সফর।

এর আগে আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ডের সঙ্গে ঢাকা-ওয়াশিংটন অংশীদারী সংলাপে অংশ নিতে গত বছরের মার্চে ঢাকায় এসেছিলেন তিনি। সফর শেষে রোববার দিবাগত রাতেই তার ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে।