সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়ে বাবার মরদেহ সামনে রেখে সৎমা ও মেয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। এতে জানাজার সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়। পরে পুলিশের মধ্যস্ততায় নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক ঘণ্টা পর জানাজা শেষে মরদেহ দাফন করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে কুমিল্লার হাউজিং এস্টেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া ওই ব্যক্তির নাম সিরাজুল হক। তিনি পেশায় একজন চিকিৎসক ছিলেন। তার মরদেহ সামনে রেখে প্রথম পক্ষের মেয়ে ও দ্বিতীয় স্ত্রীর মধ্যে এ ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, ডা. সিরাজুল বেলা ১১টার দিকে মারা যান। খবরে পেয়ে তার একমাত্র মেয়ে ও মেয়ের জামাতাসহ স্বজনরা বাসায় আসেন। এদিন বিকেল ৪টায় তার দাফনের সময় নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু সম্পত্তি নিয়ে মেয়ে ও সৎমায়ের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তারা ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন। এরপর পুলিশ ও স্থানীয়দের মধ্যস্ততায় প্রায় এক ঘণ্টা পর বিকেল ৫টায় জানাজা শেষে দাফন করা হয়।
সিরাজুল হকের মেয়ে হাছনেয়ারা বেগম বলেন, ‘আমার যখন বয়স ১২ বছর তখন মা মারা যান। ১৫ বছর বয়সে আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর আমি স্বামীর বাড়ি চলে যাই। বাবা ঘরে একা, তাই দ্বিতীয় বিয়ে করেন। ওই সংসারে তাদের কোনো সন্তান হয়নি। গত ২০ বছর ধরে বাবা অসুস্থ ছিলেন। চারবার স্ট্রোক করেছেন। তখন আমার সৎমা এবং তার ভাই জাহাঙ্গীর ও তারেক হাউজিং জমির টিপসই নেয়। আমি কোনো সম্পত্তি পাইনি। আমি ছাড়া আমার বাবার কোনো ছেলে-মেয়ে নেই।’
মেয়ের জামাতা ডা. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘শ্বশুরের লাশ দেখতে গেলে তারা আমার মেয়ের ব্যাগ আটকে রাখে। ঘর থেকে তাকে বের হয়ে যেতে বলে। আমার স্ত্রীকেও মারধর করে। তখন একটু ধস্তাধস্তি হয়। তারা ২০১৮ সালে আমার শ্বশুরের ৮ শতক জমি, তিনতলা ভবনসহ হেবা দলিল করে নিয়ে যায়। ব্যাংকের সব টাকাও তারা নিয়ে যায়।’
এ বিষয়ে ডা. সিরাজুল হকের দ্বিতীয় স্ত্রী সেতারা বেগম বলেন, ‘স্বামীর লাশ সামনে রেখে এ বিষয়ে এখন আমি কোনো কথা বলবো না। বিষয়টি নিয়ে পরে কথা বলবো।’
কুমিল্লার কোতোয়ালি থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এসএসআই) বিষ্ণু কুমার রায় বলেন, লাশ দাফনে বাধার খবর পেয়ে আমরা হাউজিং ১ নম্বর সেক্টরে মসজিদের সামনে যাই। এরপর উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে মারা যাওয়া ব্যক্তির জানাজা ও দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।