ফাইল ছবি
সাজা হওয়ায় সংবিধান অনুযায়ী বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, ‘যেহেতু বেগম খালেদা জিয়া দুটো মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত, সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ দ্বারা তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না। তার মানে তিনি (খালেদা জিয়া) নির্বাচন করতে পারবেন না।’
তিনি আরো বলেন, ‘আবেদনের প্রেক্ষিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দুটো শর্তে তার দণ্ডাদেশ স্থগিত রেখে মানবিক কারণে মুক্তি দিয়েছেন। শর্ত দুটো হচ্ছে, তিনি ঢাকায় নিজ বাসায় থেকে দেশে চিকিৎসা নেবেন এবং বিদেশ যেতে পারবেন না। সেখানে তিনি রাজনীতি করতে পারবেন না এমন কোন শর্ত ছিল না।’
শনিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার বাদৈর ইউনিয়নের জমশেরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বিএনপির রাজনীতি মিথ্যা ও হত্যার বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া রেলওয়ে জংশনে তিনি বলেন, ‘বিএনপি যখন ৭৫-পরবর্তী সময় থেকে ক্ষমতা এসেছিল তখন থেকে হত্যার রাজনীতি শুরু করে। হত্যা ও হত্যার পর মিথ্যা বলার রাজনীতি হচ্ছে তাদের আদর্শ।’
কসবার একটি বিদ্যালয়ে পুনর্মিলনী, কসবা ও আখাউড়ায় প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীতে যোগ দিতে মন্ত্রী মহানগর প্রভাতী ট্রেনে করে এসে তিনি আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে নামেন। সেখানে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বক্তব্য দেন। পরে মন্ত্রী সড়কপথে কসবার উদ্দেশে রওনা হন। পথে আখাউড়ার প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন।
আখাউড়ায় আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করে তারা। এসব তাদের আদর্শের মধ্যে লেখা আছে। তারা এটা ছাড়া কিছু করতে পারে না। আমরা বলতে চাই, বাংলার জনগণ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শুধু উন্নয়ন দেখে নাই, রাজনৈতিক শান্তিও দেখেছে। এটা আমরা অব্যাহত রাখতে চাই।’
কসবায় আনিসুল হক বলেন, ‘খালেদা জিয়া দুটো দুর্নীতি মামলায় আসামি ছিলেন। সেই মামলাগুলোর একটি বিচারিক আদালতে এবং আরেকটি হাইকোর্টে আপিল শুনানি হয়েছে এবং তাকে দণ্ড দেওয়া হয়েছে। বিচারিক আদালতে পাঁচ বছরের দণ্ড দেওয়া হয়েছিল, হাইকোর্টের আপিলে সেটা বাড়িয়ে ১০ বছর করা হয়েছে। আরেকটি মামলায় বিচারিক আদালতে শুনানি শেষে তাকে সাত বছরের দণ্ড দেওয়া হয়েছে।’
খালেদা জিয়ার রাজনীতি করা না করা নিয়ে সাংবাদিকরাই ধূম্রজালের সৃষ্টি করেছেন মন্তব্য করে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে তার ভাই শামীম ইস্কান্দারের আবেদনের প্রেক্ষিতে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। আবেদনে বলা হয়েছিল, খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ, তার জীবন বিপন্ন। তার সুচিকিৎসার প্রয়োজন। এই আবেদনের প্রেক্ষিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দুটো শর্তে তার দণ্ডাদেশ স্থগিত রেখে মানবিক কারণে মুক্তি দিয়েছেন।’
জমশেরপুর উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. নাছিরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রধান শিক্ষক মো. আলী আমজাদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. শাহ আলম, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. গোলাম সারোয়ার, কসবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদুল কাওসার ভূঁইয়া জীবন, কসবা পৌরসভার মেয়র এম জি হাক্কানী প্রমুখ।