বিড়ালছানার লোভ দেখিয়ে অপহরণ, শিশুর মরদেহ মিললো ডোবায়

Spread the love

আবিদা সুলতানা আয়নী

চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থেকে বিড়ালছানার লোভ দেখিয়ে অপহরণের সাতদিন পর শিশু আবিদা সুলতানা আয়নীর লাশ উদ্ধার করেছে পিবিআই।

বুধবার (২৯ মার্চ) ভোরে পাহাড়তলীর ওয়ারলেস এলাকা ডোবা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

এর আগে ২১ মার্চ ওই শিশু নগরীর পাহাড়তলী থেকে নিখোঁজ হয়। পরে শিশু আয়নী অপহরণের শিকার জানিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা মো. রুবেলের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তার মা। রুবেল ওই এলাকার তরকারি বিক্রেতা।

শিশু আয়নী পাহাড়তলী এলাকার আব্দুল হাদি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। পাহাড়তলীর আব্দুর কাজীর দীঘির পাড় এলাকায় তাদের বাসা। শিশুটির মা মোছাম্মৎ বিবি ফাতেমা পোশাক কারখানার কর্মী। শিশুটির বাবা ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন।

চোখের সামনে উদ্ধার করা হচ্ছে নিজের গর্ভে ধারণ করা একমাত্র মেয়েকে। সেখানে দাঁড়িয়ে বিলাপ করছিলেন মা। কয়েকজন চেষ্টা করেও তাকে আটকে রাখতে পারছেন না। মায়ের এমন কান্নার দৃশ্যে উপস্থিত অনেকের চোখও ভিজেছে।

আয়নীর মা বিবি ফাতেমা বলেন, মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর থানায় গিয়েছিলাম। পুলিশ যদি আমার মেয়েকে খুঁজতো-এই ঘটনা ঘটতো না। আমি বার বার পুলিশকে বলেছি, রুবেলকে সন্দেহ হয়। সে আমাকে দেখলে হাসে। পুলিশ আমার কথার গুরুত্ব দেয়নি। আমি মেয়েকে অনেক খুঁজেছি। রুবেলকে সন্দেহ করেছি।

কাঁদতে কাঁদতে মূর্ছা যাচ্ছেন শিশু আয়নীর দাদা জাফর আহম্মেদ। তিনি জানান, আমি দুই মাস ধরে গ্রামের বাড়ি ফেনীতে ছিলাম। নাতনি আবিদাকে দেখতে পারিনি। নিখোঁজের সংবাদ শুনে পাহাড়তলী এসেছিলাম। থানায়ও যোগাযোগ করেছিলাম। থানা গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করেনি।

মরদেহ উদ্ধারের সময় পাহাড়তলীর কাজীর দিঘীরপাড় এলাকায় বিপুল লোক জড়ো হন। ঘটনাস্থলে ভুক্তভোগী শিশুর মা এবং তার নিকটাত্মীয়রাও আসেন। তারা সবাই অভিযুক্ত রুবেলের ফাঁসি দাবি করেন।

এর আগে মঙ্গলবার চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক শরমিন জাহানের আদালতে বিড়ালছানা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে আবিদা সুলতানা আয়নীকে অপহরণ করার অভিযোগে শিশুটির মা বিবি ফাতেমা বাদী হয়ে মামলা করেন।

আদালত পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মামলাটি এজাহার হিসেবে নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর বিশেষ পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা বলেন, ডোবা থেকে বস্তাবন্দি শিশু আবিদা সুলতানা আয়নীর গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, ধর্ষণের পরে রুবেল আবিদাকে হত্যা করেছে।