উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানের সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে ক্ষমতার লড়াইয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫৬ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে তিন জাতিসংঘ কর্মীও আছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি। একটি সামরিক ঘাঁটিতে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির সময় এই কর্মীরা গুলিবিদ্ধ হন।
বোরবার দেশটির চিকিৎসাকর্মীরা জানিয়েছেন,আশেপাশের শহর ও অঞ্চলে কমপক্ষে ৫৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। তারা আরও বলেছেন, কয়েক ডজন সামরিক কর্মী মারা গেছেন, যাদের মধ্যে কয়েকজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫৯৫ জন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, সুদানের আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ, সেনাপ্রধানের বাসভবন এবং খার্তুম আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর, রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন স্টেশনসহ দুটি বিমানবন্দরের দখল নেয়ার দাবি করেছে।
অবশ্য ওই দাবি প্রত্যাখান করেছে সেনাবাহিনী। বিমানবন্দরসহ খার্তুমের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পাল্টা দাবি করেছে তারাও। এসব জায়গায় সারারাত তুমুল লড়াই চলেছে।
সুদানের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আধাসামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালোর বাহিনীর সঙ্গে কোনো সমঝোতা কিংবা সংলাপ হবে না। আধাসামরিক বাহিনীকে ভেঙে দিতে হবে। তাহলে সংলাপ হতে পারে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো পলাতক অপরাধী। নাগরিকদের আমরা তাদের সঙ্গে কোনো বোঝাপড়া না করার আহ্বান জানাই। তার কিংবা তার বাহিনীর দেখা পেলে রিপোর্ট করতেও বলা হয়েছে।
এক বিবৃতিতে আরএসএফ জানিয়েছে, তারা উত্তরের শহর মেরোওয়ে এবং পশ্চিমে এল-ওবেইদের বিমানবন্দর দখল করেছে। সেখানে বিমান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে।
খার্তুমের বাসিন্দারা বিবিসিকে তাদের আতঙ্ক ও ভয়ের কথা জানিয়েছেন। একজন বর্ণনা করেন তার পাশের বাড়িতে গুলি চালানো হয়েছে।
২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বেসামরিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে উত্তর আফ্রিকার এই দেশটির সেনাবাহিনী। এরপর থেকে সেনাবাহিনীর জেনারেলরা ‘স্বাধীন কাউন্সিল’-এর নামে দেশ পরিচালনা করছিলেন।
এই স্বাধীন কাউন্সিলের ভাইস-প্রেসিডেন্ট হলেন জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালো। অপরদিকে, স্বাধীন কাউন্সিলের প্রধান হলেন জেনারেল আব্দেল ফাতাহ আল-বুরহান।