খোলামেলা ছবি-ভিডিও দিয়ে শতাধিক প্রেম ও ১০ বিয়ে মাহির, অতঃপর…

Spread the love

সামাজিক মাধ্যমে নিজেকে আবেদনময়ী হিসেবে উপস্থাপন। চোখের ইশারায় পুরুষদের আটকানো তার নেশা। তার রূপে কেউ আটকে গেলেই শুরু হয় খোলামেলা ছবি ও ভিডিও আদান প্রদান। এরপর প্রেম ও বিয়ে। ব্যস এভাবেই শুরু হয় প্রতারণা। শতাধিক প্রেম ও ১০ বিয়ের পর কোটি টাকা কামিয়েছেন তানজিনা আক্তার ইভা ওরফে মেরি ওরফে মাহি। অতঃপর ধরা পড়েছেন পুলিশের হাতে।

অষ্টম শ্রেণি পাস করা মাহির বয়স ইতিমধ্যে ৩৪ পেরিয়েছে। সুন্দরী, স্মার্ট ও আবেদনময়ী। পোশাকও পরেন পশ্চিমা সংস্কৃতির আদলে। টিকটকে পারদর্শী, ফলোয়ার সংখ্যাও বেশ।নিজের ছবি ও ভিডিও দিয়ে আকৃষ্ট করতেন অন্যদের।সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেকে পরিচয় দিতেন ও লেভেল এবং এ লেভেল পাস করে যুক্তরাজ্যের একটি আইটি ফার্মে কর্মরত হিসেবে।

প্রেমের সম্পর্ক গড়ে সীমাবদ্ধ থাকতো না সম্পর্ক। পুরুষটা ধনী হলে করে ফেলতেন বিয়ে। পরে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও, অডিও ও ভিডিওতে হওয়া কথোপকথন রেকর্ড করে ব্লাকমেইল করে হাতিয়ে নিতেন মোটা অঙ্কের টাকা।

১০ জনকে টাকার জন্য করেছেন বিয়ে। আর শতাধিক পুরুষের সঙ্গে প্রেম করে রাত্রিযাপন করেছেন। প্রতারণা করে তাদের কাছ থেকে আদায় করেছেন কোটি কোটি টাকা। ভুক্তভোগীরা একসময় তার প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন। অভিযোগ যায় থানাতে।

তদন্ত করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ (উত্তর)। পরে অভিযান চালিয়ে তানজিনা আক্তার ইভা ওরফে মেরি ওরফে মাহি (৩৪) ও মাসুম বিল্লাহ ফারদিন ওরফে রাজুকে গ্রেফতার করা হয়।

গোয়েন্দারা জানান, গ্রেফতার ইভা ফেসবুক, টিকটকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অর্ধনগ্ন ছবি পোস্ট করে বিভিন্ন ধনাঢ্য ব্যক্তিদের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাতেন মাহি। তারপর কথা আদান-প্রদানের এক পর্যায়ে তাদের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর বিনিময় হতো। নিজেকে কুমারি বলে পরিচয় দিয়ে গুলশানের বিভিন্ন অভিজাত হোটেলে লাঞ্চ ও ডিনারের জন্য তাদের দাওয়াত দিতো। কৌশলে স্ন্যাপচ্যাটে অ্যাকাউন্ট খুলিয়ে স্ন্যাপচ্যাটের ম্যাসেঞ্জারে নিজের অর্ধনগ্ন ও নগ্ন ছবি পাঠিয়ে অন্তরঙ্গ কথা বলতে উদ্বুদ্ধ করতেন তিনি। আর সেই অন্তরঙ্গ কথোপকথনের রেকর্ড সংরক্ষণ করে সম্পর্কের ফাঁদে ফেলে মোটা অঙ্কের টাকা সুকৌশলে হাতিয়ে নিতেন।

আরও জানা গেছে, টার্গেট ব্যক্তিদের বিভিন্ন নাইট পার্টি, স্পা সেন্টার ও বারে নিয়ে তাদের বিভিন্ন অনৈতিক কাজে আকৃষ্ট করে নিজের স্বার্থ হাসিল করতেন। তার ফাঁদ থেকে বাদ যায়নি সমাজের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, নেতা, উচ্চ পদস্থ চাকরিজীবীরা।

জানা গেছে, ২০০৩ সালে এক প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি চাকরিজীবীর সঙ্গে মাহির পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তার সঙ্গে ডিভোর্স হয় ২০১০ সালে। তারপর লাগামহীন জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। প্রথম স্বামীর ঘরে তার তিন সন্তান থাকলেও তাদের নিজের সন্তান বলে পরিচয় দেন না।