৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অনেক তারকাই আত্মগোপনে কিংবা লুকিয়ে আছেন। তাদের একজন হলেন গত সরকারের আমলে চলচ্চিত্রাঙ্গনে প্রভাব বিস্তার করা চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। বর্তমানে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে জুলাইয়ের শেষ দিকেই যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান বিতর্কিত এ নায়িকা। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ সেলিমের ছত্রছায়াতেই তিনি প্রভাব বিস্তার করেন চলচ্চিত্রাঙ্গনে। চেয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হতেও। দলটির বিভিন্ন প্রচারণামূলক কাজে নিয়মিত পাওয়া যেতো নিপুণকে। শুধু তাই নয়, শেখ সেলিম ও আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিতে নিজের প্রভাব বিস্তার করেন তিনি। এমনকি সেই জোরেই শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের চেয়ার দখল করেন। কাউকে তোয়াক্কা না করে তার একক সিদ্ধান্তেই চলতো সমিতি। চলচ্চিত্রের মানুষজন বিরক্ত ও ভেতরে ভেতরে ফুঁসে উঠলেও নিপুণের বিরুদ্ধে কিছু বলার কিংবা করার সাহস করেননি কেউ। ২০০৬ সালে চলচ্চিত্রে আসেন নিপুণ।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বদলে যায় তার জীবন। শেখ সেলিমের ছত্রছায়ায় একের পর এক সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়ে কাজ করেন। বাগিয়ে নেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও। সিনেমার পর ২০১২ সালে তিনি বনানীর মতো অভিজাত এলাকায় শুরু করেন নিজস্ব পার্লার। সেই প্রতিষ্ঠানেও অনৈতিক কাজ হতো বলেও অভিযোগ রয়েছে। শুধু তাই নয়, শেখ সেলিমের গল্পে সিনেমা নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন নিপুণ। যদিও পরবর্তীতে সেটা হয়নি। এদিকে নিপুণ সামাজিক মাধ্যমেও এখন খুব একটা সরব না। গত স্বৈরাচার সরকারের পক্ষে বেশ কয়েকটি পোস্ট অবশ্য ৫ই আগস্টের পর করেছেন তিনি। নিপুণের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র মানবজমিনকে জানায়, নিপুণের সহসা দেশে ফেরার কোনো পরিকল্পনা নেই এখন। কারণ দেশে ফিরলে তোপের মুখে পড়তে পারেন তিনি। তিনি এও জানান, নিপুণ এখন আমেরিকায় অবস্থান করছেন তার মেয়ের সঙ্গে। তবে সেখানেও খুব একটা বের হচ্ছেন না তিনি। সেখানকার বাঙালি কমিউনিটির
ক্ষোভের মুখেও রয়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিকের পর নিপুণ রাশিয়া চলে যান। মস্কোতে ২০০৪ পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। এরপর পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে থাকা অবস্থাতেই বিয়ে করেন নিপুণ। যদিও সেই বিয়ে টেকেনি বেশিদিন। তবে সেই ঘরে তানিশা হোসেন নামে এক কন্যাসন্তান রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে ২১ বছর বয়সী মেয়ে তানিশার সঙ্গেই এখন থাকছেন নিপুণ।