প্রতারণায় দশে দশ টপটেনের হোসেন

Spread the love

নব্বইয়ের দশকে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে তিন ভাই মিলে শুরু করেন জামা-কাপড়ের ব্যবসা। তিন ভাইয়ের মেধা ও অক্লান্ত পরিশ্রমে মাত্র এক দশকেই ব্যবসা ফুলেফেঁপে ওঠে। প্রতিষ্ঠানটি রূপ নেয় লিমিটেড কোম্পানিতে। এরপর ছয়টি লিমিটেড কোম্পানি নিয়ে গড়ে ওঠে গ্রুপ অব কোম্পানিজ। সব ঠিকঠাকই চলছিল। বিপত্তি বাধে যখন দুই ভাই জানতে পারেন, মেজো ভাই তাদের ঠকিয়ে কোম্পানির শত শত কোটি টাকা সরিয়ে নিজের নামে সম্পদ গড়েছেন। প্রতিবাদ করায় বড় ও ছোট ভাইয়ের নামে থাকা কোম্পানির ৪০ শতাংশ শেয়ার বাতিল করে নিজের ও দুই স্ত্রীর নামে নেওয়ার চেষ্টা করেন মেজো ভাই। বিষয়টি জানাজানি হলে সেটি আর সম্ভব হয়নি। এরপর মালিকানা থাকলেও দুই ভাইয়ের জন্য কোম্পানিতে প্রবেশে অলিখিত নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে কোম্পানির সব আয়-ব্যয়ের হিসাব এবং লভ্যাংশ দেওয়া বন্ধ করে দেন মেজো ভাই। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক প্রধান হারুন অর রশিদকে দিয়ে হুমকি-ধমকি দেওয়ান সহোদরদের। প্রভাশালীদের সঙ্গে সখ্য গড়ে আপন দুই ভাইয়ের সঙ্গে এমন ভয়াবহ প্রতারণা করা ব্যক্তির নাম মো. সৈয়দ হোসেন। তিনি জনপ্রিয় ‘টপটেন’ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)। আর প্রতারিত দুই ভাই হলেন বড় ভাই মো. আব্দুল আউয়াল ও ছোট ভাই মো. উজ্জ্বল।

অনুসন্ধানে জানা যায়, একসময় তিন ভাই হকারি করতেন। এভাবে কিছু সঞ্চয় করে এবং বাবার গরু বিক্রির টাকায় ১৯৯৯ সালে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। শৈল্পিক লোগো সংবলিত ‘টপটেন’ নামে তিন ভাইয়ের প্রতিষ্ঠান মাত্র এক দশকেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এরপর ২০১১ সালে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে প্রথম কোম্পানিটি নিবন্ধিত হয়। দ্বিতীয়টি ২০১৫ সালে এবং বাকি চারটি কোম্পানি ২০১৬ সালে নিবন্ধিত হয়। পরে ছয়টি লিমিটেড কোম্পানি নিয়ে তৈরি হয় টপটেন গ্রুপ অব কোম্পানিজ। তিন ভাইয়ের মধ্যে শেয়ার বণ্টন হয় যথাক্রমে মেজো ভাই মো. সৈয়দ হোসেন ৬০ শতাংশ, ছোট ভাই মো. উজ্জ্বল ৩৫ শতাংশ এবং বড় ভাই মো. আব্দুল আউয়াল ৫ শতাংশ। তবে দুই ভাইয়ের অভিযোগ, শেয়ারের সমবণ্টন থাকার কথা থাকলেও মেজো ভাই সৈয়দ হোসেন সেটি মানেননি। সৈয়দ হোসেন চালাকি এবং তথ্য গোপন করে তার নিজ নামে ৬০ শতাংশ শেয়ার রাখেন।

প্রতারণার এখানেই শেষ নয়, এমডি হয়ে সৈয়দ হোসেন লিমিটেড কোম্পানি গঠনের পর থেকেই বিভিন্ন ছলচাতুরীর আশ্রয় নিতে থাকেন। কোম্পানি আইন না মেনে নিজের ইচ্ছামতো প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করেন; জড়িয়ে পড়েন বিভিন্ন আর্থিক অনিয়মে। কোম্পানির মেমোরেন্ডাম অব আর্টিক্যালের নিয়ম না মেনে একক স্বাক্ষরে কোম্পানির সব কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। টপটেন ছাড়া আর কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান না থাকলেও প্রতিষ্ঠানটির টাকায় নিজের নামে ৩০০ কোটি টাকারও বেশি সম্পদ ক্রয় করেছেন সৈয়দ হোসেন। যার মধ্যে রয়েছে নিজ গ্রাম কিশোরগঞ্জে ৩ হাজার শতাংশের অধিক জমি। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে কোম্পানির লোন মর্টগেজ হিসেবে আংশিক জমি (৮১৮ দশমিক ১৬ শতাংশ) দেখানো হলেও বাকিটা অপ্রদর্শিত। সৈয়দ হোসেনের আরও সম্পত্তির মধ্যে ২১৬, এলিফ্যান্ট রোডে ৫ হাজার ২২১ বর্গফুটের ফ্লোর স্পেস, চট্টগ্রামের মিম হাসনাথ টাওয়ারে ২ হাজার ৫০ বর্গফুটের ফ্লোর স্পেস, রাজধানীর মিরপুর-১১-এর নর্দান খান হেইট ভবনের নিচ তলায় ২ হাজার ৯০৫ বর্গফুটের ফ্লোর স্পেস, একই ভবনের তৃতীয় তলায় ২ হাজার ৯০৫ বর্গফুট ফ্লোর স্পেস এবং উত্তরার পলওয়েল মার্কেটে দুটি দোকান রয়েছে। এ ছাড়া বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ৫ কাঠার দুটি প্লট, আফতাব নগরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা নামে-বেনামে রয়েছে জায়গা-জমি-প্লট-ফ্ল্যাট। দেশের বাইরে সৌদি আরবে এক্সক্লুসিভ শোরুম রয়েছে সৈয়দ হোসেনের। পাকিস্তান ও দুবাইয়েও ব্যবসা রয়েছে বলে জানা গেছে। নামিদামি ব্র্যান্ডের একাধিক গাড়ির মালিক তিনি। নিজ গ্রাম কিশোরগঞ্জে গড়ে তুলেছেন বিলাসবহুল বাংলো বাড়ি। সৈয়দ হোসেনের ব্যক্তিগত নামে শত শত কোটি টাকার সম্পদ থাকলেও কোম্পানিটি প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ঋণে রয়েছে।

বাকি দুই ভাই কোম্পানির পরিচালক মো. আব্দুল আউয়াল ও মো. উজ্জ্বল কোম্পানির নামে সম্পদ ক্রয় করতে বললে এবং মেজো ভাইয়ের নামে থাকা সম্পদ কোম্পানির নামে হস্তান্তরের কথা বললে তাতে ক্ষিপ্ত হন সৈয়দ হোসেন। পরবর্তী সময়ে তিনি এ দুজন পরিচালকের স্বাক্ষর জাল করে ২০১৭ সালের ১৮ জুন থেকে ৫ জুলাইয়ের মধ্যে জয়েন্ট স্টক কোম্পানি অ্যান্ড ফার্মে বাকি দুই ভাইয়ের সব শেয়ার নিজের দুই স্ত্রীর নামে হস্তান্তর করার আবেদন করেন। বিষয়টি জানতে পেরে বাকি দুই ভাই লিখিতভাবে অভিযোগ করলে শেয়ার হস্তান্তর প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। অবৈধভাবে দুই স্ত্রীকে নিয়ে বিভিন্ন বোর্ড রেজ্যুলেশন করে নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন সৈয়দ হোসেন।

নথিপত্র বলছে, সৈয়দ হোসেন কোম্পানির এমডি হওয়া সত্ত্বেও অনৈতিকভাবে ‘স্বত্বাধিকারীরূপে’ বিভিন্ন ব্যাংকে হিসাব খুলে বিপুল পরিমাণ আর্থিক লেনদেন করেছেন। ওয়ান ব্যাংকের এলিফ্যান্ট রোড শাখায় ২০১২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৬ সালের ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে ১০৪ কোটি ৯৮ লাখ ২২ হাজার টাকা; আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের সোনারগাঁও জনপথ শাখায় ২০১৩ সালের ২৯ জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ৪৮ কোটি ১৫ লাখ ৮৬ হাজার ৭৪০ টাকা; ওয়ান ব্যাংকের এলিফ্যান্ট রোড শাখায় ‘টপটেন ফেব্রিক্স’ নামে আরও একটি ‘স্বত্বাধিকারী’ হিসাবে ২০১২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩০ কোটি ৩৯ লাখ ৭২ হাজার ৮২৬ টাকা লেনদেন করেছেন। তিনটি ব্যাংক হিসাবে মোট ১৮৩ কোটি ৫৩ লাখ ৮১ হাজার ৫৬৬ টাকা জমা দিয়ে আবার তা উত্তোলন করা হয়েছে। এ ছাড়া স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের মিরপুর শাখায় ব্যক্তিগত হিসাবে ২০২০ সালের ১১ মার্চ থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত ১৯ কোটি ১২ লাখ ৪১ হাজার ২৯৪ টাকা বিভিন্ন শোরুম থেকে জমা করে তা উত্তোলন করেন সৈয়দ হোসেন।

ছোট ভাই মো. উজ্জ্বল অভিযোগ করে বলেন, ২০১৮ সালের ২১ জানুয়ারি ৩৫ শতাংশ মালিকানার অনুপাতে শোরুম ভাগ করে দেওয়ার কথা বলে মেজো ভাই সৈয়দ হোসেন তাকে বনানীতে একটি অফিসে ডেকে নেন। সেখানে গেলে একটি কক্ষে বন্দি করে রেখে টপটেন অফিসের কর্মচারী মাসুদ খান, মাজহার আলী, শফিক, টিপুসহ ২০ থেকে ২৫ জন ছাত্রলীগের পরিচয় দেওয়া লোক দিয়ে তাকে বিভিন্ন দলিলে স্বাক্ষর করতে বলেন। উজ্জ্বল বলেন, ‘আমাকে সারা দিন আটকে রাখে। পরে ওয়াশরুমে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে আসি। ফেলে আসি আমার ব্যক্তিগত গাড়ি, গাড়িতে রাখা ব্যাংক চেক ও আইফোন। এরপর থেকে অফিসে না যেতে বিভিন্ন সময়ে মোবাইল ফোনে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন মেজো ভাই। এক দিন অফিসে যাওয়ার পথে মিরপুর সনি সিনেমা হলের কাছে কিছু লোক নিয়ে এসে আমার গাড়ি আটকে মারধর করেন। এসব বিষয়ে রাজধানীর বনানী ও মিরপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি। তবে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। কোনো ধরনের সহায়তাও করেনি আমাকে।’

উজ্জ্বল আরও বলেন, ‘কোম্পানির ৩৫ শতাংশ শেয়ারহোল্ডার হওয়ার পরও ২০১৭ সাল থেকে আমি অফিসে ঢুকতে পারি না। এ নিয়ে হাইকোর্টে দুটি মামলা করি। মামলা দুটি বর্তমানে আপিল বিভাগে বিচারাধীন (পেন্ডিং) আছে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাইকোর্ট পরিচালক মো. উজ্জ্বলকে কোম্পানির সব আর্থিক লেনদেনে ম্যান্ডেটরি জয়েন্ট অথরাইজড সিমেটরি হিসেবে ২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল এবং একই বছরের ১৫ ডিসেম্বর দুটি আদেশ দেন। এ ছাড়া কোম্পানির আয়-ব্যয়ের হিসাব অডিট করারও নির্দেশনা দেন। এরপর কোম্পানির আয়, ব্যয় ও মোট সম্পদ বের করার জন্য কোর্টের নির্দেশে অডিট হয়। রিপোর্টে অডিটর বলেছেন, কাজের ক্ষেত্রে তাকে কোনো ধরনের সহায়তা করেননি সৈয়দ হোসেন। অন্যদিকে অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী মো. উজ্জ্বল ৩৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা প্রাপ্য হন। আদালত তাকে ৫০ কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেন। পরে উজ্জ্বল আদালতের কাছে অর্থের বদলে বড় দুটি কোম্পানি থেকে একটি কোম্পানি তাকে দেওয়ার আবেদন জানান। এমন সময় সৈয়দ হোসেন ছোট ভাই উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে একটি হয়রানিমূলক মামলা করেন। সেই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে প্রায় তিন মাস জেল খাটেন উজ্জ্বল। এই ফাঁকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস তার সহযোগী সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মো. মেহেদী হাসানকে দিয়ে মামলা প্রভাবিত করেন। উজ্জ্বলের আবেদন আমলে না দিয়ে তখন আদালত কোম্পানির মালিকানা না দিয়ে তাকে টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেন। পরবর্তী সময়ে তিনি হাইকোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সৈয়দ হোসেনের বাড়ি কিশোরগঞ্জ হওয়ায় সাবেক রাষ্ট্রপতি মোঃ আব্দুল হামিদের ছেলে, কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিকের সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে। টপটেনের মিরপুর ও এলিফ্যান্ট রোডের অফিসে নিয়মিত যাতায়াত ছিল তৌফিকের। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাবেক প্রধান হারুন অর রশিদের সঙ্গেও ছিল গভীর সখ্য। সৈয়দ হোসেন নিয়মিত যাতায়াত করতেন হারুনের দপ্তরে। তাদের প্রভাবেই দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন সৈয়দ হোসেন। অর্থ ও সম্পদের মোহ এবং স্ত্রীদের কু-পরামর্শে পড়ে ভয়ংকর প্রতারণা করেছেন আপন দুই ভাইয়ের সঙ্গে। তিন ভাইয়ের হকারি করে জমানো টাকায় গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠান পেশিশক্তির জোরে দখলে রেখেছেন নিজেই।

অভিযোগ রয়েছে, রাজধানীর কাঁটাবনের আলবারাকা টাওয়ারে টপটেন অফিসের বেজমেন্টে গভীর রাত পর্যন্ত চলত প্রভাবশালীদের নিয়ে আড্ডা। সেই আড্ডায় নিয়মিত অতিথি ছিলেন রাষ্ট্রপতিপুত্র তৌফিক। এই অফিস ব্যবহৃত হতো রষ্ট্রপতিপুত্রের অর্থ পাচারের বুথ হিসেবে।

এদিকে টপটেন গ্রুপের দ্বিতীয় কোম্পানি টপটেন মার্ট লিমিটেড গঠন হয় ২০১৫ সালের ২৮ মে। কোম্পানির মেমোরেন্ডাম অব আর্টিক্যাল অনুযায়ী, মো. সৈয়দ হোসেন পাঁচ বছরের জন্য এমডি নির্বাচিত হন। নিয়মানুযায়ী ২০২০ সালের ২৮ মে কোম্পানির বোর্ড পুনর্গঠন করার কথা থাকলেও সেটি তিনি না করে ওই পদে এখনো বহাল আছেন। একইভাবে অন্য পাঁচটি কোম্পানির পরিচালনা বোর্ডের মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও বোর্ড গঠন না করে অবৈধভাবে পদে বসে আছেন সৈয়দ হোসেন। বাকি দুই ভাই উজ্জ্বল এবং আব্দুল আউয়াল কোম্পানির বোর্ড পুনর্গঠনের পরামর্শ দিলে সৈয়দ হোসেন উল্টো দুই ভাইয়ের নামে একাধিক মামলা করেন। এরপর আব্দুল আউয়াল আদালতে সৈয়দ হোসেনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। সেই মামলা সিআইডির তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় এবং সৈয়দ হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেন সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার রতন কৃষ্ণ নাথ। মামলার তদন্ত প্রতিবেদন কোনোভাবেই পক্ষে নিতে না পেরে ৫ শতাংশ শেয়ারহোল্ডার আব্দুল আউয়ালকে পরে বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে ম্যানেজ করেন সৈয়দ হোসেন। আব্দুল আউয়ালকে ৩৬ লাখ টাকা দিয়ে একটি গাড়িও উপহার দেন তিনি।

অন্যদিকে, সব হারিয়ে নিঃস্ব কোম্পানির ৩৫ শতাংশ শেয়ারহোল্ডার মো. উজ্জ্বল নিজের অধিকার ফিরে পেতে মামলা করেন আদালতে। প্রভাবশালীদের নির্দেশে গত আড়াই বছর ধরে সেই মামলাটি সিআইডির ‘লাল ফিতায় বন্দি’ রয়েছে। মামলার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে তদন্ত কর্মকর্তা ও সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার শিরিন সুলতানা কালবেলাকে বলেন, ‘কোম্পানির মামলা তো তাই একটু বেশি সময় লাগছে। তদন্ত শেষ পর্যায়ে, আমরা দ্রুতই প্রতিবেদন দেব।’ তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক দিলরুবা পারভীন কালবেলাকে বলেন, ‘তদন্ত চলছে, শেষ হলে আদালতে প্রতিবেদন দেব।’

অভিযোগ নিয়ে সৈয়দ হোসেনের সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলে কালবেলার এই প্রতিবেদক। এ সময় তিনি বলেন, ‘আপনি ভুল কথা বলছেন। আমি একটি মিটিংয়ে আছি, পরে কথা বলছি।’ এরপর তিনি দীর্ঘক্ষণ সংযোগ থাকলেও কোনো কথা বলেননি, কোনো প্রশ্নেরও জবাব দেননি। তাকে ফের ফোন দিলে তিনি লাইন কেটে দেন।