এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার ঋণখেলাপি মামলা করেছে জনতা ব্যাংকের চট্টগ্রাম চৌমুহনী জীবন বীমা শাখা। রবিবার চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুল রহমানের আদালতে মামলাটি করা হয়।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম কালের কণ্ঠকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আদালত মামলাটি গ্রহণ করেছেন। ঋণ পরিশোধ না করায় এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম, তার ভাইসহ ২৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আদালতে আমরা মামলার সঙ্গে পৃথক দুটি আবেদন করেছিলাম। সাইফুল আলম মাসুদের কিছু শেয়ার আছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে। এগুলো ক্রোকাবদ্ধ রাখার জন্য আবেদন করেছিলাম।
এ ছাড়া তার ভাই আবদুস সামাদ লাবুর কিছু শেয়ার আছে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে, এগুলো ক্রোকাবদ্ধ করতে আবেদন করেছিলাম। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুজনের শেয়ারগুলো ক্রোকাবদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার এই ঋণের এত বড় অনিয়ম কিভাবে হলো সেটি তদন্ত করতে দুদককে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় এস আলম গ্রুপের সাইফুল আলম (এস আলম), আবদুল্লাহ হাছান, ওসমান গণি, আবদুস সামাদ (লাবু), মিসেস শাহানা ফেরদাউস, মিশকাত আহমদ, সাইফুল আলমের স্ত্রী মিসেস ফারজানা পারভিন, মো. শহীদুল আলমসহ গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে বিবাদী করা হয়।
জানা যায়, জনতা ব্যাংকের চট্টগ্রামের সাধারণ বীমা ভবন করপোরেট শাখা থেকে এস আলম গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশন লিমিটেডের কাছ থেকে এক হাজার ৯৬৩ কোটি ৫৪ লাখ ৬১ হাজার ৫৫৯ টাকা আদায়ে এই মামলা হয়। জনতা ব্যাংকের সাধারণ বীমা ভবন করপোরেট শাখা থেকে এই ঋণ নেওয়া হয়। জানা গেছে, ২০ নভেম্বর জনতা ব্যাংক খেলাপি ঋণ আদায়ে এস আলম গ্রুপের এক হাজার ৮৬০ শতাংশ জমি নিলামে তোলে।
জানা গেছে, ২০১২ সালে জনতা ব্যাংকের চট্টগ্রাম করপোরেট শাখা থেকে প্রাথমিকভাবে ৬৫০ কোটি টাকা ঋণ নেয় গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশন। এ ঋণ ২০২১ সাল পর্যন্ত সুদ-আসলে মোট এক হাজার ৭০ কোটি ৬৫ লাখ টাকায় পৌঁছে।
এর মধ্যে ৬১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা পিএডি (পেমেন্ট অ্যাগেইনস্ট ডকুমেন্ট), ২২৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা এলটিআর (লোন ট্রাস্ট রিসিপ্ট) ঋণ এবং ২২৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা সিসি হাইপো ঋণ। সুদ-আসলসহ সব মিলিয়ে এক হাজার ৯৬৩ কোটি ৫৪ লাখ ৬১ হাজার ৫৫৯ টাকা আদায়ে এই মামলা করে জনতা ব্যাংক।