মধ্যম আয়ের প্রবৃদ্ধির ফাঁদ আর অদৃশ্য নয়, এটি এখন বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দৃশ্যমান। শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি বলেছে, আগের সরকারের আমলে কিছু প্রবৃদ্ধি হলেও, তা যেভাবে উপস্থাপিত হয়েছে, আসলে পুরো বিষয়টি তেমন ছিল না। খসড়ায় সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কৌশলগুলোরও সমালোচনা করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, উন্নয়নের মানদণ্ড হিসেবে পরিচিত বড় বড় প্রকল্পগুলোর নির্মাণকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে, যা ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তা এবং কৃষক অথবা শহরগুলোকে বাসযোগ্য করে তোলার বা সাধারণভাবে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ওপর বিনিয়োগের গুরুত্বকে পাশ কাটিয়ে গেছে। কারচুপির নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার দৃঢ় সংকল্পের কারণে আওয়ামী লীগ সরকার এসব উন্নয়ন কৌশলের ভবিষ্যৎ পরিণাম সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করেনি। তাই আগের সরকার, সরকার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীমহল ও শীর্ষ আমলারা গণতান্ত্রিক জবাবদিহিতাকে পরোক্ষভাবে উপেক্ষা করেছে।
বিগত সরকার ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হওয়ার কথা বলেছে। পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল এসবকে উন্নয়নের উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করেছে। অথচ দেশে বৈষম্য বেড়েছে। ৪ থেকে ৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি দিয়ে এই উন্নয়ন সম্ভব নয়। দেশে যে উন্নয়ন দেখানো হয়েছে সেখানেও শ্রমিকের উৎপাদনশীলতা কমে গেছে। রেমিট্যান্স আর গার্মেন্টস দিয়ে উচ্চ আয়ের দেশ হওয়া সম্ভব নয়। বাংলাদেশের মাথাপিছু আয়, মজুরি কাঠামো নিম্ন আয়ের আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে তুলনীয়। উচ্চ আয়ের দেশে উপনীত হওয়ার জন্য যে হাইটেক শিল্প প্রয়োজন সেগুলোর কিছুই হয়নি। তাছাড়া বাংলাদেশের যে কর কাঠামো সেটিও আফ্রিকার দুর্বল দেশগুলোর ন্যয়।