অভিযোগ ছিল ২৮টি বিয়ে করেছেন অভিনেত্রী রোমানা ইসলাম স্বর্ণা। শুধু তা-ই নয়, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও ছিল তার বিরুদ্ধে। এবার এসবের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন এই অভিনেত্রী। এর মধ্যে অবশ্য এসব অভিযোগের জেরে আটকও হয়েছিলেন এই নায়িকা।
প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০২১ সালে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এই মডেল-অভিনেত্রীকে।
আজ সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ক্র্যাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ নিয়ে কথা বলেন তিনি। মূলত কারাভোগের প্রতিবাদেই এই সংবাদ সম্মেলন করলেন অভিনেত্রী।
রোমানা বলেন, ‘আমাকে মিথ্যা অভিযোগে সুপরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে। সাবেক স্বামী কামরুল ইসলাম জুয়েল সে সময় পুলিশকে ব্যবহার করে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন আমাকে। সে সময়কার ডিবিপ্রধান হারুন-অর-রশীদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও ফজলে রাব্বীর মদদেই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল আমাকে। শুধু তা-ই নয়, মামলাসহ ২৮টি বিয়ের অপপ্রচার চালিয়েছেন আমার সাবেক স্বামী। এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। আজও এসব অভিযোগের প্রমাণ তিনি দিতে পারেননি। আমাকে যেভাবে মিডিয়ার সামনে উপস্থাপন করা হয়েছিল, সেসবেরও কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি জুয়েল।’
সংবাদ সম্মেলনে অভিনেত্রী বলেন, ‘২০১৯ সালে যখন আমার ক্যারিয়ারে যখন সুসময় তখন জুয়েলকে বিয়ে করি। তিনি আমার দ্বিতীয় স্বামী। আগের বউয়ের কথা গোপন রেখে আমাকে বিয়ে করেন।
এসব জানার পর দাম্পত্য জীবনে নেমে আসে অশান্তি ও নির্যাতন। একটা পর্যায়ে তার সঙ্গে সংসার না করার সিদ্ধান্ত নিই। নির্যাতনের জন্য কয়েকবার সাধারণ ডায়েরি করেও কোনো লাভ হয়নি। বিয়ের আগে বলেছিলেন, অভিনয়ে অসুবিধা নেই। কিন্তু বিয়ের পর জুয়েল আমাকে অভিনয় করতে দেননি।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিয়ের পর মায়ের বাসায় থাকতাম। একবার আমার প্রথম ঘরের সন্তানকে শুটিং থেকে অপহরণ করে। আওয়ামী লীগ নেতাদের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় হুমকি দিতেন। দুইবার তাকে ডির্ভোস দিয়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত আমাকে ভিত্তিহীন মামলা দিয়ে হয়রানি করেন। ডির্ভোস তুলে নিলে মামলা তুলে নেবেন এমন শর্তও দেওয়া হয়।’
রোমানা বলেন, ‘সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন জুয়েলের অপকর্ম করতে সহযোগিতা করতেন। তাই উপায় না থাকায় একটা পর্যায়ে সমঝোতা করে মামলা তুলে নিই। প্রথম ডিভোর্সের পর কিছুদিন ভালো গেলেও দ্বিতীয়বার ডির্ভোস দিলে আমাকে আটকানোর জন্য মিথ্যা মামলা দেন। সে জন্য আমাকে গ্রেপ্তার করানোর জন্য ডিবি হারুনকে মোটা অঙ্কের অর্থ দিয়েছিলেন বলে জানতে পারি। দেড় মাস জেলে থাকার পর, ডির্ভোস দিতে পারব না- সেই শর্তে জামিন করান। পরিবারের কথা চিন্তা করে এই শর্তে রাজি হই। ডিভোর্স চলাকালীন ভয়ভীতি দেখিয়ে নতুন করে কাবিন ছাড়াই বাসায় এসে থাকতেন জুয়েল। আমার সন্তান-পরিবারকে মেরে ফেলার হুমকি দিতেন। পরিবারের কথা ভেবে এত দিন সহ্য করেছি। জেল থেকে ফেরার পর জানতে পারি জুয়েল সৌদি গেছেন। সেই সুযোগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা আবেদন করে আমি সেখানে চলে যাই। কিন্তু এতেও রেহাই পাইনি তার কাছ থেকে।
সর্বশেষে রোমানা বলেন, ‘নানা হুমকি দিতেন, তাই এত দিন কিছু বলতে পারিনি। সরকার পতনের পর দেশে এসেও কিছুদিন অসুস্থ থাকায় এই বিষয়ে কথা বলিনি। এখনো কোনো মামলা করিনি। তবে শিগগিরই এই বিষয়ে সবাই জানতে পারবেন।’