সাংবাদিক এবং টেলিভিশন সঞ্চালক মুন্নী সাহার ব্যাংক হিসাবে জমা হয়েছে ১৩৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে তিনি বিভিন্ন সময় ১২০ কোটি টাকা উত্তোলন করেছেন। স্থগিত করা তার ব্যাংক হিসাবে স্থিতি আছে মাত্র ১৪ কোটি টাকা। সাংবাদিক মুন্নী সাহা, তার স্বামী কবির হোসেন তাপস এবং তাদের মালিকানাধীন এমএস প্রমোশনের ব্যাংক হিসাবে এসব অর্থ পেয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এর বাইরে গুলশান-তেজগাঁও লিংক রোড এলাকায় শান্তি নিকেতনে ১৬৫, রোজা গ্রীণে তাদের একটি ডুপ্লেক্স বাড়ির সন্ধান পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ওয়ান ব্যাংকের কারওয়ানবাজার শাখায় মুন্নী সাহার স্বামী কবির হোসেনের মালিকানাধীন এমএস প্রমোশনের নামে ২০১৭ সালের ২ মে একটি হিসাব খোলা হয়। হিসাবটির নমিনি হিসেবে রয়েছেন মুন্নী সাহা। ব্যাংকটির চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ শাখায় জনৈক মাহফুজুল হকের মালিকানায় প্রাইম ট্রেডার্সের নামে ২০০৪ সালের ২১ জুলাই একটি হিসাব আগেই খোলা হয়। এ দুই প্রতিষ্ঠানের নামে ওয়ান ব্যাংক থেকে ৫১ কোটি ৫০ লাখ টাকার ঋণ নেওয়া হয়। ঋণ পরিশোধ না করে বারবার সুদ মওকুফ ও নবায়ন করা হয়। এর মধ্যে ২০১৭ সালেই সুদ মওকুফ করা হয় ২৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকার।
প্রতিষ্ঠান দুটির মধ্যে পারস্পারিক ব্যবসায়ীক কোনো সম্পর্ক না থাকলেও বিভিন্ন তারিখে হিসাব দুটির মধ্যে বিপুল অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে। ২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর আলাদা তিনটি চেকের মাধ্যমে এমএস প্রমোশনের হিসাব থেকে প্রাইম ট্রেডার্সের হিসাবে ৫৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা স্থানান্তর করা হয়, যা সন্দেহজনক। এই অর্থ পাচার হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখছে আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বিএফআইইউ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুসন্ধানে উঠে আসে, ওয়ান ব্যাংক খাতুনগঞ্জ শাখায় প্রাইম ট্রেডার্সের নামে চলতি হিসাব খোলা হয় ২০০৪ সালের ২১ জুলাই। প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন পণ্য আমদানি করে স্থানীয় বাজারে সরবরাহ করে। গ্রাহকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৮ সালের ৩ আগস্ট স্থানীয় বাজার থেকে সাড়ে ১১ হাজার টন মটর কেনার জন্য ৯০ দিন মেয়াদি ২৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার ঋণ মঞ্জুর করে ওয়ান ব্যাংক। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে ঋণ পরিশোধ না হওয়ায় দুইবার মেয়াদ বাড়ায় ব্যাংক। তবুও ঋণ পরিশোধ না করায় ২০১১ সালের জানুয়ারিতে সুদ মওকুফসহ পুনর্গঠন করা হয়।