বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু ঘিরে রহস্যের জট খুললো। ডিএনএ টেস্টে প্রমাণিত হলো সেই অধ্যাপক মাহমুদুর রহমানই হারিছ চৌধুরী।
বুধবার তার ডিএনএ টেস্টের প্রতিবেদন হাইকোর্টে জমা দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, মাহমুদুর রহমান নামে সাভারে দাফন করা ব্যক্তিই হারিছ চৌধুরী।
অ্যাসিস্টেন্ট অ্যাটর্নি জেনারেল মো. ইছা বলেন, ডিএনএ রিপোর্টে হারিছ চৌধুরীর লাশের সত্যতা পাওয়া গেছে। বর্তমানে তার লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। তার দেহবশেষ দাফনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
২০২১ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর রাজধানীর পান্থপথে মারা যান হারিছ চৌধুরী। দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। পুলিশ খুঁজছিলো তাকে।
প্রয়াত হারিছ চৌধুরীর মেয়ে বিলেত প্রবাসী ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন চৌধুরী হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছিলেন। এরপর এ নিয়ে চরম বিতর্ক দেখা দেয়। অনেকেই বলতে থাকেন এটা বানানো গল্প। সিআইডি বিষয়টিকে উড়িয়ে দেয়। তারা বলেন, অযথাই বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। স্বৈরাচারী আমলে তদন্ত বন্ধ করে দেয়া হয়। গত ৫ই আগস্টের ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর বিষয়টি নতুন করে সামনে আসে। সামিরা চৌধুরী আদালতে যান। এরপর ডিএনএ টেস্টের আবেদন করেন।
ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয়ের বিচার শাখা থেকে ৮ই অক্টোবর হারিছ চৌধুরীর মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের নির্দেশনা দেয়া হয়। এতে সাভার মডেল থানাধীন জামিনে খাতামুন নবীঈনের জামিয়া খাতামুন কবরস্থান থেকে মরদেহ উত্তোলনের সময় এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এসএম রাসেল ইসলাম নূরকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়। একইসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণসহ ম্যাজিস্ট্রেরিয়াল দায়িত্ব পালনের কথাও বলা হয়। নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশন নং-১০৭৮৭/২৪-এ হারিছ চৌধুরীর মৃতদেহ উত্তোলন করে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের জন্য আদালত আদেশ প্রদান করেন। তার মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরী সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন দায়ের করেন। এই মর্মে যে, তার পিতা হারিছ চৌধুরীকে জামিনে খাতামুন নবীঈনের জামিয়া খাতামুন কবরস্থানে মাহামুদুর রহমান নামে দাফন করা হয়। হারিছ চৌধুরীর দেহাবশেষ কবর থেকে উত্তোলন করে তার পরিচয় প্রমাণের জন্য ডিএনএ পরীক্ষা করানো, পরিচয়ের ইতিবাচক ফলাফল, মৃত্যু সনদ পাওয়া, ইন্টারপোলের রেড নোটিশ থেকে তার নাম মুছে ফেলা এবং তাকে নিজ জেলায় মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে যথাযথ সম্মানের সঙ্গে দাফন করার আবেদন করেন।
এর আগে গত ৫ই সেপ্টেম্বর বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীর লাশ কবর থেকে তুলে ডিএনএ টেস্টের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মাহবুবুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। হারিছ চৌধুরীর মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন চৌধুরীর রিট আবেদনের শুনানি শেষে আদালত এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহদীন চৌধুরী।