সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, দুই এমপিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম, দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে সোমবার দুদকের সংশ্লিষ্ট অনুসন্ধান কর্মকর্তারা কমিশনের নির্ধারিত কার্যালয়ে আলাদাভাবে ছয়টি মামলা করেন। তাদের মধ্যে সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি জান্নাত আরা হেনরীর বিরুদ্ধে ৫৭ কোটি ১৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে দুদক।
তিনি নিজের নামের ৩৫টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ২ হাজার ২ কোটি ৬৬ লাখ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। এর মধ্যে ১৩ কোটি ৭৮ লাখ মার্কিন ডলারের লেনদেনের তথ্যও পাওয়া গেছে। এ ছাড়া হেনরীর স্বামী শামীম তালুকদার লাবুর বিরুদ্ধে স্ত্রীর অপরাধলব্ধ অর্থ দ্বারা পরস্পর যোগসাজশে অসাধু উপায়ে আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ২০ কোটি ৪৭ লাখ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। লাবুর নিজের নামের ১৪টি ব্যাংক হিসাবে ৩০৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে। দুদক মহাপরিচালক ও মুখপাত্র আক্তার হোসেন এক ব্রিফিংয়ে মামলা-সংক্রান্ত তথ্য জানান।
এ ছাড়া সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৬ কোটি ২৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অস্বাভাবিক তথ্য পাওয়া গেছে। সাবেক এই মন্ত্রী ও নিজের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে পরিচালিত ১৫টি ব্যাংক হিসাবে ২১ কোটি ১৮ লাখ টাকার লেনদেন করেন। এ ছাড়া তাঁর স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।
একই সঙ্গে সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমানের বিরুদ্ধে ৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করা হয়। এজাহারে বলা হয়, তাঁর নিজের নামে ২৩টি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনকভাবে ২৩ কোটি ৭২ লাখ টাকার লেনদেন করা হয়। তাঁর স্ত্রী ফাতেমা আক্তারের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৯২ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করা হয়।
বরগুনা-২ আসনের সাবেক এমপি শওকত হাচানুর রহমান রিমনের বিরুদ্ধে ৩৫ কোটি ৯৬ লাখ ৮৭ হাজার টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাঁর অপরাধলব্ধ অর্থ স্ত্রী রওনক রহমানের নামেও রেখেছেন।
এদিকে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে দুদকে নিজেদের সম্পদ বিবরণী জমা না দেওয়ার অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী (এস কে সুর), তাঁর স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী ও মেয়ে নন্দিতা সুর চৌধুরীর বিরুদ্ধে আলাদাভাবে ‘নন-সাবমিশন’ মামলা করা হয়েছে।