গুমের মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

Spread the love

 

গুমের মামলায় বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)।

প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল আজ (সোমবার) এ আদেশ দেন। পাশাপাশি ট্রাইব্যুনাল আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন।

আদেশের বিষয়ে পরবর্তীতে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, “আজকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আমরা দুটি দরখাস্ত মুভ করেছি। বিগত ১৫ বছরে বাংলাদেশের যে ভয়ের সংস্কৃতি চালু করা হয়েছিল সেটার নাম হচ্ছে গুম এবং আরেকটি হচ্ছে ক্রসফায়ার। গুম করে গোপন কারাগারে আটকে রেখে মানুষ হত্যা, স্বাধীনতা হরণ ইত্যাদি কাজ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অপরাধ। বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনেও এসব মানবতাবিরোধী অপরাধ। বাংলাদেশে গত ১৫ বছর সেসব অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তত্ত্বাবধানে এবং সে সময় পুলিশ থেকে শুরু করে গোয়েন্দাসহ বেশিরভাগ বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত ছিল। এসব বাহিনীর কিছু কিছু সদস্য যাদেরকে প্রলোভন দেখিয়ে, বিদেশে পাঠানোর লোভ দেখিয়ে, নানাভাবে পুরস্কৃত করে তাদেরকে দিয়ে সিস্টেমেটিকালি গুমের মতো এই অপরাধ করা হয়েছিল। যেহেতু এই অপরাধগুলো গণহত্যার থেকে একটু ভিন্ন ধরনের অপরাধ। তাই আজকে ভিন্ন একটি মামলায় তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছিলাম।”

তাজুল ইসলাম বলেন, “যাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে তাদের মধ্যে আছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারেক সিদ্দিকী, সাবেক পুলিশ আইজিপি বেনজীর আহমেদসহ বিভিন্ন সংস্থার মোট ১২ জন। তাদের বিরুদ্ধে আমরা গ্রেপ্তার পরোয়ানা জারির আবেদন জানিয়েছি। পরবর্তীতে আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। এদের মধ্যে একজন বরখাস্তকৃত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান। যিনি ইতোমধ্যে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করার জন্য আমরা সকলের নাম বলছি না। এখানে বিভিন্ন বাহিনীর লোকজন আছেন।”

তিনি বলেন, “পাশাপাশি আদালত আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন। সেদিন যদি তদন্ত রিপোর্ট আসে তাহলে সেই তদন্ত রিপোর্ট দাখিল হবে। গ্রেপ্তার সংক্রান্ত রিপোর্ট দেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।”

তাজুল ইসলাম বলেন, “এ সকল অপরাধে যারা জড়িত তারা কেউই রাষ্ট্রের থেকে বড় নয় এবং আইনের ঊর্ধ্বে নয়। সুতরাং আমরা খুঁজছি অপরাধ এবং অপরাধীকে। আমরা দেখব না কে কত বড়, কার কি পজিশন। নিরপেক্ষভাবে এদেরকে সঠিক এবং ন্যায়বিচার করা হবে। যাতে করে বাংলাদেশে একেবারে এই অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি হবে এবং ভবিষ্যতেও কেউ যেন এমন দুঃসাহস না করতে পারে।”