আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, পুরোপুরি বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থ রক্ষা করেই ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয়ের চুক্তি হয়েছে। দেশের জনগণ এই চুক্তির ফলে লাভবান হয়েছে। রোববার এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
এই চুক্তি নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাম্প্রতিক বক্তব্যকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ষড়যন্ত্রমূলক আখ্যা দিয়ে এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি। মির্জা ফখরুল রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে মনগড়া ও বানোয়াট মন্তব্য করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিরবচ্ছিন্নভাবে জনগণের বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করতে সরকার আদানির কাছ থেকে একটি লাভজনক চুক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ ক্রয়ের উদ্যোগ নিয়েছে। ভারতের একটি কোম্পানিকে দিয়ে দুই বিলিয়ন ডলার এককালীন বিনিয়োগ করিয়ে, ভারতের অভ্যন্তরে ৬০০ একর জমির ওপর বিদুৎ কেন্দ্র বানিয়ে এবং সে দেশের আকাশে কয়লা পুড়িয়ে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে- সেটাই সর্বনিম্ম দামে ক্রয় করে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হবে। সেই বিদ্যুৎ বাংলাদেশের মানুষ ব্যবহার করবে। যারা (বিএনপি) বিদ্যুতের বদলে জনগণকে খাম্বা দিয়েছে, বিদ্যুতের দাবি করায় জনগণের ওপর গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করেছে তাদের মুখে বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতি নিয়ে কথা বলা মানায় না।
বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আবারও নাকচ করে দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুটি একটি ডেড ইস্যু। দেশের সর্বোচ্চ আদালত থেকে সুস্পষ্টভাবে অবৈধ ও অসাংবিধানিক আখ্যা দেওয়ায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়া অসম্ভব।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে অগণতান্ত্রিক আখ্যা দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, গণতন্ত্রকামী প্রতিটি মানুষই জানেন, জনগণের নির্বাচিত নয় এমন ব্যক্তি দিয়ে এক মুহূর্তের জন্যও রাষ্ট্র পরিচালনা গণতন্ত্রের অন্তর্নিহিত আদর্শের সম্পূর্ণ পরিপন্থি। অনির্বাচিত ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে জনগণ ক্ষমতাহীন হয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, বিশ্বব্যাপী প্রচলিত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও দেশের সাংবিধানিক বিধান অনুযায়ী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জনগণই নির্ধারণ করবে কে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও তাদের অন্তরে স্বৈরাচারের চেতনা প্রবাহমান। যারা একজন দুর্নীতিবাজ পলাতক খুনি আসামির জন্য দলীয় গঠনতন্ত্রে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়- তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না। কানাডার আদালত কর্তৃক আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সন্ত্রাসী সংগঠন বিএনপিই এ দেশের গণতন্ত্রের প্রধান অন্তরায়। বিএনপি মানেই হলো- দুর্নীতি, লুটপাট, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও খুন-ধর্ষণ; সর্বোপরি জনগণের ওপর নির্যাতন।
১৯৯১ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়েই আওয়ামী লীগ সবসময় ক্ষমতায় এসেছে। জনগণের আশা-আকাঙ্খা ও প্রত্যাশাকে ধারণ করেই রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। রাষ্ট্রক্ষমতার জন্য আওয়ামী লীগ কখনো জনগণ ছাড়া অন্য কারও মুখাপেক্ষী হয়নি। যার জন্য দেশি-বিদেশি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে অসংখ্যবার আওয়ামী লীগের নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ক্ষমতা দখলের জন্য বিএনপি নেতারা বিদেশি দূতাবাস এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহল দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। বিদেশি প্রভুদের স্বার্থরক্ষার মুচলেকা দিয়ে যারা ক্ষমতায় আসে- তারা কখনই জনগণের কল্যাণ করতে পারে না। বিএনপি-জামায়াত অশুভ জোটের দুঃশাসন, দুর্নীতি, লুটপাট ও দুর্বৃত্তায়নই তার জ্বলন্ত উদাহরণ ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য দেশের উন্নয়ন ও জনগণের জীবনমান উন্নয়ন। সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকায় বাংলাদেশের অর্থনীতি মজবুত ভিতের ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সকল প্রতিকূলতা জয় করে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাশে বিনির্মাণের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।