‘চুরি করার ক্ষমতা আছে তাই করেছি’

Spread the love

নাটোরে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ট্যাব মেধাবী শিক্ষার্থীদের না দিয়ে একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকের ছেলে-মেয়ে ও স্বজনদের দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করায় স্থানীয় এক ব্যক্তির ওপর ক্ষিপ্ত হয়েছেন বিদ্যালয়টির এক সহকারী শিক্ষক। প্রতিবাদকারী মকুল হোসেনকে এসময় ওই শিক্ষক বলে ওঠেন, ‘আমাদের চুরি করার ক্ষমতা আছে তাই চুরি করেছি, তাতে আপনার কী? আমরা ট্যাব নিয়ে এসেছি, আমাদের ছেলে-মেয়েদের তা দিয়েছি, আপনি এখানে ঝামেলা করার কে?’

গত শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে নাটোরের নাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। ওই মুহূর্তের ১ মিনিট ১৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও শনিবার সকাল থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে নাটোরের সর্বত্র আলোচনার ঝড় বইছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় বাসিন্দা মকুল হোসেনের ওপর চড়াও হওয়া ওই ব্যক্তি নাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আকরামুল ইসলাম।

এ নিয়ে জানতে চাইলে মকুল হোসেন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর উপহারস্বরূপ মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে ট্যাব বিতরণ করা হয়। খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারলাম নাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীরা কেউ ট্যাব পায়নি। ট্যাব পেয়েছে প্রধান শিক্ষকের ভাতিজি ও ভাগ্নি, সহকারী শিক্ষক সুলতান হোসেনের মেয়ে, আকরামুল ইসলামের ছেলে, সাইদুল ইসলামের মেয়ে, বিদায়ী একজন শিক্ষার্থী এবং আরও একজন সহকারী শিক্ষকের ছেলে।’

মকুল হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের ছেলে-মেয়ে হওয়ার সুবাদে তারা ট্যাব পেয়েছে। প্রকৃত মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে ট্যাব কেন দেয়া হলো না, এই বিষয়ে বিদ্যালয়ে গিয়ে জানতে চাইলে সহকারী শিক্ষক আকরামুল ইসলাম উত্তেজিত হয়ে পড়েন। আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনিয়মকারী শিক্ষকসহ সহকারী শিক্ষকের বিচার দাবি করছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী শিক্ষক আকরামুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘উত্তেজিত হয়ে ভুলবশত কথাগুলো বলে ফেলছি। এটা আমার ভুল হয়েছে।’

নাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদ মন্ডল এ বিষয়ে বলেন, ‘একটু ভুলভ্রান্তির কারণে এই সমস্যা হয়েছে। ট্যাব যাদের দেয়া হয়েছিল তাদের কাছ থেকে ফেরত নিয়ে প্রকৃত মেধাবী শিক্ষার্থীদের দেয়া হয়েছে। সহকারী শিক্ষকের উত্তেজিত হওয়ার বিষয়ে আমার জানা নেই।’

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম আকতার দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘ইতিমধ্যেই ওই বিদ্যালয়ের অভিযোগটি আমলে নেয়া হয়েছে। সহকারী শিক্ষক যে কথা বলেছেন, সেটা তিনি বলতে পারেন না। ট্যাব বিতরণে অনিয়ম ও সহকারী শিক্ষকের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’