উপবৃত্তির টাকা না পেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে আলোচনায় উঠে এসেছে প্রথম শ্রেণীর ছাত্র জুনাইদ সিদ্দিক। রাজশাহী দুর্গাপুর উপজেলার তেবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে জুনাইদ।
তার বাবা একজন রিকশাচালক। মহামারি করোনা উপবৃত্তির জন্য টাকা দিয়েছিল সরকার। কেউ সেই টাকা উঠিয়ে নিয়েছে। তাই ছেঁড়া ব্যাগ ও ভাঙ্গা ছাতা নিয়ে স্কুলে যেতে হয় জুনাইদকে। এমন অবস্থায় ভীষণ মন খারাপ তার। সেজন্য প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছে ওই শিশু শিক্ষার্থী। তার সেই চিঠি এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী কাছে ওই চিঠিতে জুনাইদ লিখেছে, উপবৃত্তির টাকা এখনও সে পায়নি। তার বাবা বলেছিলেন উপবৃত্তির টাকা পেলে তাকে একটি স্কুলব্যাগ ও ছাতা কিনে দেবেন। কিন্তু টাকা না পাওয়ায় নতুন স্কুলব্যাগ ও ছাতা কেনা হয়নি। স্যারদের মাধ্যমে জুনাইদ জানতে পেরেছে কেউ তার উপবৃত্তির টাকা তুলে নিয়েছে। এজন্য তাকে প্রতিদিন ছেঁড়া স্কুলব্যাগ আর ভাঙ্গা ছাতা নিয়েই স্কুলে যেতে হয়! তবে এতে তার মনে কোনো দুঃখ নেই। যেন পরে এমন ঘটনা আর কারও সঙ্গে না ঘটে সেটাই চায় ছোট্ট জুনাইদ।
এদিকে জুনাইদের চিঠির বিষয়ে তেবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাফির উদ্দিনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, জুনাইদের বাড়ি দুর্গাপুরের রঘুনাথপুরে। সে টাকা না পেয়ে বিষয়টি তাকে জানিয়েছে। তার বাবা রিকশাচালক। আর্থিক টানাপড়েনে তিনি ছেলেকে নতুন স্কুলব্যাগ এবং ছাতা কিনে দিতে পারেননি। তাই উপবৃত্তির টাকা পেলে কিনে দেবেন বলে ছেলেকে আশ্বাস দিয়েছিলেন।
তবে তারা বিষয়টি দেখছেন বলেও জানান ওই শিক্ষক।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান শিক্ষক মাফির উদ্দিন বলেন, একজন শিক্ষার্থীকে নতুন পোশাকের জন্য সরকার এক হাজার টাকা ও ছয় মাসের উপবৃত্তি ৯শ টাকা দেয়। কিন্তু তাদের মোবাইল অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে কেউ টাকা তুলে নিয়েছে। প্রায় স্কুলেই এমনটা ঘটনা ঘটেছে। জুনাইদের সাথেও এমনটি হয়েছে।
দুর্গাপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোখলেসুর রহমান জানান, প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লেখার বিষয়টি তার জানা নেই। কিন্তু ওই স্কুলের এক শিক্ষার্থী টাকা না পেয়ে অভিযোগ করেছে। যদিও অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে টাকা তুলে নেওয়ায় সেই টাকা আর নতুন করে দেওয়ার নিয়ম নেই। এরপরও তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।
দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোহেল রানা জানান, বিষয়টি তার কানে আসার পরপরই তা রাজশাহী জেলা প্রশাসককে (ডিসি) জানানো হয়েছে। শিগগিরই জুনাইদকে ডিসি কার্যালয়ে ডেকে তার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।